Powered By Blogger

শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১২

নগ্ন গণবিয়ে!


19 Feb 2012   07:26:01 PM   Sunday BdST Print this E-mail this

নগ্ন গণবিয়ে!


আসাদুল হক খোকন, নিউজরুম এডিটর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
কথায় আছে- বিয়ে হচ্ছে ‘দিল্লিকা লাড্ডু’। এটি যে খাবে সে-ও পস্তাবে। আর এটি যে না খাবে সে নির্ঘাৎ পস্তাবে।
অন্যদিকে বিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে- ‘বিয়ে’ নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃসাহসিক কাজের মধ্যে একটি। অনেকের মতে আবার এটি হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহনের চেয়েও কঠিন কাজ। কেউ কেউ তাই এমন দুঃসাহসিক কাজের ঝুঁকি না নিয়ে সারা জীবন চিরকুমার হয়েই কাটিয়ে দেন।
কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো- ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও নারী-পুরুষরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ধারণা করা যায়, প্রতি মুহূর্তে বিয়ে অনুষ্ঠান চলছে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও। আর বিয়ের  সেই আকাঙ্খিত মুহূর্তটির জন্য উৎকন্ঠায় প্রতীক্ষা করছেন হাজারো প্রেমিক- প্রেমিকা। মানব জীবনে তাই ‘বিয়ে’ শব্দটি দখল করে আছে বড় একটি জায়গা।
বিয়ে উপলক্ষ্যে নানা দেশ ও সমাজের প্রথা বা রীতি অনুযায়ী বর-কনেকে সজ্জিত করা হয় বাহারী পোষাক আর বর্ণিল সাজে। কোথাও কোথাও কনের বাড়তি সৌন্দর্য প্রদর্শনে তার শরীরের উর্দ্ধাংশ রাখা হয় উম্মুক্ত।
দেশে-বিদেশে এ নিয়ে রয়েছে নানা রীতি ও প্রথা। রয়েছে অভিনব আর অবাক করা বর্ণাঢ্য -বিশাল বিয়ে আয়োজনের বহুমাত্রিক ঘটনার খবরও। একস্থানের রীতি-সংস্কৃতি স্বভাবতই আরেক স্থানে হয় অনভিপ্রেত। আর এভাবেই গড়ে ওঠে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র। তারপরেও, যত বৈপরীত্যই হোক না কেন, অপর সংস্কৃতির লোকজনের আচার-আচরণ আর রীতি রেওয়াজকে যার যার নিজের বিষয় গণ্য করে স্বাভাবিক বলে মেনে নেই আমরা।
কিন্তু বিয়ে করার জন্য দলবেঁধে (বর-কনে উভয়ে) সম্পূর্ণ বিবস্ত্র বা বিবসনা হওয়ার কথা পূর্বে শোনা যায় নি। চরম দুঃসাহসিকতার বহিঃপ্রকাশ, এমন দৃশ্য কল্পনা করা কষ্টকর হলেও এরকম ঘটেছে সত্যি!
সম্প্রতি ৯ জোড়া উদ্ভট রুচিসম্পন্ন নগ্ন বর-কনে জ্যামাইকার একটি সমুদ্র সৈকতে অংশ নিয়েছেন দুঃসাহসিক ‘নগ্ন বিয়ে’ অনুষ্ঠানে। তবে, তাদের ‘নির্লজ্জ’ নগ্নতাকে কিছুটা হলেও আড়াল করেছিল কনেদের হাতের লাল, সাদা আর হলুদ রঙের বাহারি ফুলগুলো।
পরে, দিনের ঝলমলে সূয্যের আলোয় তারা নিজেদের মধ্যে বিয়ের শপথ বাক্য পাঠ করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এসময় কারো পায়ে দামী জুতো, হাতে রিস্টব্যান্ড এমন কি গলায় বো-টাই আর নেকলেসের দেখা মিললেও দেখা মিলেনি কোন পোষাকের! শরীরে পোশাকের বালাই না থাকলেও যথারীতি কনেদের  অনেকের মাথায়ই ছিলো ঘোমটা বা অবগুণ্ঠন! দু’একজন পরেছিলেন মুকুট বা হ্যাট।
অন্যদিকে, তাদের দৈহিক বাড়তি সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে শরীরে ব্যবহার করা হয় উজ্জলতা বৃদ্ধির পেইন্ট!
৯টি নগ্ন জুটির আলোচিত-সমালোচিত এই গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জামাইকার নেগ্রিল সমুদ্র সৈকতে উন্মুক্ত আকাশের নিচে। এমন উদ্ভট নগ্ন বিয়ের আয়োজক ছিলো ‘দ্য হেডোনিজম ২ রিসোর্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আয়োজনের পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠানটি একই সাথে বহন করেছে এই ৯ জুটির নগ্ন হয়ে বিয়ে করার যাবতীয় খরচ!
প্রতিষ্ঠানটি জানায়- নগ্ন বিয়ের ইভেন্টকে সামনে রেখে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ‘কেন তোমরা নগ্নতার মধ্য দিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চাও?’ এ প্রশ্নটিসহ তৈরি করা হয় অসংখ্য প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয় ১০০ জুটিকে।
পরে, এদের মধ্য থেকে ভাগ্যবান ১০ জুটিকে দেয়া হয় ‘নগ্ন বিয়ের’ বিশেষ সুযোগ। কিন্তু; দুঃখের বিষয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেছে মোট ৯টি জুটি। একেবারে শেষ সময়ে এসে একটি জুটি ওই গণবিয়েতে অংশগ্রহণ করেনি।
এক জুটি তাদের অনুভূতি সম্পর্কে বলেন- ‘আমরা একে অপরকে নগ্নভাবেই ভালোবাসি। সুতরাং, আমাদের যৌথ জীবন কেন নগ্নতার মধ্য দিয়ে শুরু করবো না?’!
এর জবাবে কী বলতে পারি আমরা?

‘যেমন উদ্ভট-বিচিত্র কাণ্ড তেমনি এর সাফাই!’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন